আমি হয়তো মারা যাবো
~~শহীদুল ইসলাম~~
ইচ্ছেরা ডুব সাঁতার দিতে জানে
পিপীলিকার উড়ে যাওয়া দেখতে দেখতে
আমি হয়তো মারা যাবো।
ইচ্ছেরা ইচ্ছে হয়ে যুথবদ্ধ হবে
লাল পিঁপড়ের ন্যায়
কুচকাওয়াজে সামিল হবে।
ছোট পাখি উড়ে যেতে যেতে
আবার ফিরে আসবে।
আমি তাকিয়ে দেখব নীল
স্বপ্নেরা সীমাহীন স্থান বুকে ধারণ করে
রঙিন কাব্য ;প্রেমিকার ঠোঁটে ছোট তীল হয়ে
বুকের এক কোনে চেপে বসে।
পৌষ পবনে কনকনে ঠান্ডা
হাড় ছুয়ে যায়।
শুনেছি এ পৌষের মাঝামাঝি কোন এক তারিখ
প্রিয় তমা সুনন্দা তুমি
ক্রন্দন করে দুনিয়া কাঁপিয়েছিলে।
তোমার টকটকে লাল ঠোঁট
আর আজকের প্রস্ফুটিত গোলাপ
অতুলনীয়, অসম্ভব সুন্দর।
শিশির বিন্দুর জমা দৃশ্য দেখতে দেখতে
আমি হয়তো মারা যাবো।
মারা যাবো খুব ছোট একটা কারনে।
তোমার হাতের স্পর্শ
আর প্রজাপতির স্পর্শ পাবার আকাঙ্খা অতৃপ্ত।
আমি হয়তো মারা যাবো।
সুকন্ঠে সুরমীলা সুর শোনার জন্য।
ইচ্ছেরা মেঘের আড়ালে রোদ রাখে
মেঘেরা বৃষ্টি হয়ে ঝড়ে।
রোদ বৃষ্টির খেলা দেখতে দেখতে
ক্লান্ত দুচোখ বুজে আসবে
আমি একটা সুখকর স্বপ্নে বিলীন হবো।
তোমার কন্ঠ কাঁপানো হাসি
আর পরীদের মতো
উড়ে যাওয়া দেখতে দেখতে
আমি হয়তো মারা যাবো।
খুব বড় কঠিন কোন ব্যাধি
অথবা দুঃখের জন্য
আমার মৃত্যু হবে না।
আমি মারা যাবো
নদীর আছড়ে পড়া ঢেউ দেখতে দেখতে।
আমি মারা যাবো
দোয়েলের শিস শোনার জন্য।
আমি মারা যাবো
অসম্ভব ইচ্ছে পূরনের জন্য নয়।
আমি মারা যাবো
ক্ষুদ্র ইচ্ছেতেই।
সুনন্দাকে বলেছিলাম
তুমি তৈরি থেক।
বিকেলের সোনালী রোদে
দুজন মিলে ঘুরতে যাবো।
আকাশ নদী গাঙচিল দেখবো।
এক জীবনে
কী ভোগ করলে বলো!
ঘর আর উঠোন ব্যতীত কিছুই তো চিনলে না।
সুনন্দাকে বলেছিলাম
ঘর আর ঘরের উঠোন পুরো একটা পৃথিবী নয়।
পৃথিবী অনেক বড়।
আমি সুনন্দাকে আকাশ নদী গাঙচিল দেখিয়েছিলাম।
সুনন্দা প্রকৃতির দিকে হাত বাড়িয়ে দিল
আর বললো
পৃথিবী এত সুন্দর!
সুনন্দা বললো
আমি প্রকৃতি হবো।
আমি বললাম তুমিই প্রকৃতি
আর আমি প্রকৃতির প্রকৃত প্রেমিক।
সুনন্দা প্রকৃতির দিকে তাকিয়ে
ভাবনার জাল বুনে যাচ্ছে
আর হাসছে
আর দেখছে
আমি খুঁজছিলাম সুনন্দার ভেতরের সুনন্দাকে।
আমি হয়তো মারা যাবো।
সুনন্দাকে না পাবার জন্য নয়।
সম্ভবত মারা যাবো
সুনন্দার হাসির শব্দ
শুনতে পাবো না বলে।
ইচ্ছেরা কত শত রকমের হয়।
কত শত কাব্য গাঁথা থাকে।
কাব্য কণার প্রতিটা শব্দে
প্রতিটা উচ্চারণে
ইচ্ছেদের প্রকাশ দেখতে দেখতে
আমি হয়তো মারা যাবো।
২/১২/২০১৯